বনের গাছপালা উজাড় হওয়ায় বন্যপ্রাণী আজ হুমকির মুখে। এতে পরিবেশ হচ্ছে জীবের প্রতিকূল, জলবায়ু হচ্ছে বৈরী। বলেছেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার পরিচালক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন। গত সোমবার বান্দরবানের আলীকদম জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সভার তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার ‘আমরাই পারি বন্যপ্রাণী বাঁচাতে’ প্রতিপাদ্যে আলীকদমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পথসভায় লামা ও আলীকদম উপজেলা থেকে শিক্ষক, হেডম্যান, কার্বারি, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, নারী নেত্রী, বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ ৩০ জন এই সচেতনতামূলক পথসভায় অংশ নেন।
এ ছাড়া উপজেলা বন বিভাগের তৈন রেঞ্জ কার্যালয়ে সভার আয়োজন করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এতে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার পরিচালক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলাল, সহকারী বন সংরক্ষক খন্দকার মো. গিয়াস উদ্দিন, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার পরিদর্শক অসীম মল্লিক।
আইইউসিএনের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জহির উদ্দিন আকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈরী জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশে ৭০৮ প্রজাতির মাছের মধ্যে ৫৪ টি, ৬৩২ প্রজাতির পাখির মধ্যে ১২টি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে এবং ৩০ প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। এ ছাড়া ৪৯ প্রজাতির উভচর প্রাণীর মধ্যে ৮ টি,১৬৭ সরীসৃপ প্রজাতির মধ্যে ১৭টি বিলুপ্তির পথে।
তা ছাড়া ১২৭টি স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে ১২টি বিপন্ন আর ১৭টি বিলুপ্তির পথে। ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ১০৬টি অস্তিত্ব হুমকির মুখে। ডাইনোসোরের মতো বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে বাঘ। প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় ৫০টি বাঘ কমে যাচ্ছে।
জহির উদ্দিন আকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশের জীববৈচিত্র্যের অফুরন্ত ভান্ডার হচ্ছে বন। বন শুধু গাছপালাই রক্ষা করে না। সব প্রাণিজগৎকে বাঁচিয়ে রেখেছে। অনেক উন্নত জাতের ফসল উদ্ভাবনের জন্য বন্য প্রজাতির ফসলের জিন সংগ্রহ করা হয়। প্রায় দুই হাজার প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদের জন্ম, উৎপত্তি, বাস ও নিরাপদ স্থান হচ্ছে বন। আগে বনই ছিল মানুষসহ সব প্রাণীর খাদ্যের উৎস। প্রকৃতির প্রতিটি উদ্ভিদ ও প্রাণীর খাদ্যের জন্য একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। দেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বন রক্ষা করতে হবে।’