ব্যাঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে নিচের দিকে পানি গড়িয়ে পড়ে বলে স্থানীয় জনগণ এই জলপ্রপাতকে ব্যাঙ ঝিরি নাম দিয়েছেন। তীব্রবেগে পাথুরে ধাপ অতিক্রম করার সময় পাথর আর পানির ঘর্ষণের ঢেউয়ের মতো সফেদ ফেনার সৃষ্টি হয়।
আলীকদম উপজেলার অন্যতম সুন্দরী ঝর্ণা ‘দামতুয়া’র ঠিক আগে ব্যাঙ ঝিরি জলপ্রপাতের অবস্থান। ব্যাঙঝিরি শব্দটি এসেছে মুরুং ভাষা “তুক অ” থেকে। এখানে ‘তুক’ শব্দের অর্থ ব্যাঙ এবং ‘অ’ অর্থ ঝিরি। আঁকাবাঁকা পাথুরে ঝিরি বেয়ে বয়ে চলা ঝর্ণার পানি লাফালাফি করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দ্রæতগতিতে নিচের পড়ার শব্দ শুনতে ভ্রমণ পিপাসুদের অন্যরকম অনুভূতির সঞ্চার হয়।
প্রকৃতির খেয়ালে ব্যাঙঝিরি জলপ্রপাতে সৃষ্টি হয়েছে ধাপে ধাপে সিঁড়ি! সেই সিঁড়ি বেয়ে রিনিঝিনি শব্দে লাফিয়ে চলে চঞ্চলা এই ঝর্ণা। একসময় তার চঞ্চলতা গিয়ে শান্ত হয় সুন্দরী দামতুয়ার কাছে। আলীকদম উপজেলার অন্যতম পর্যটনস্পট দামতুয়া ঝর্ণার একেবারে কাছাকাছি এই জলপ্রপাত। দামতুয়া এবং ব্যাঙঝিরি জলপ্রপাত একই ট্যুরে দেখার সুযোগ রয়েছে।
চঞ্চলা এই জলপ্রপাত তার শৌর্য নিয়ে গহীন বনের বুকে তার রূপ লাবন্যের পসরা সাজিয়ে পর্যটকদের অহর্নিশ হাতছানি দিয়ে যায়। এ জাগেজলপ্রপাতের সফেদ ফেনার অবগাহনে মনে পুলক। ব্যঙ ঝিরির ঝর্ণার পানি সাগরের ঢেউয়ের মতো ফুঁসতে ফুঁসতে দামতুয়া ঝর্ণা পাদদেশে গিয়ে পড়ে। চারিদিকে পাহাড় বেষ্ঠিত স্বচ্ছ পানির এই ঝর্ণাধারা দেখলে নিমিষেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
ঝর্ণার পানিতে যে কেউ অবগাহন করে পান অপরূপ প্রশান্তি। প্রকৃতির অনাবিল প্রশান্তি আপনাকে ছুঁয়ে যাবে, শিহরিত করে যাবে সৌন্দয্যের মাদকতা। ঢাকা থেকে আগত পর্যটক নুরুল ইসলাম বলেন প্রকৃতির ঝর্না আসলে মন জুড়িয়ে যায়।
প্রকৃতির যে এতো সৌন্দর্যময় এইখানে না আসলে বুঝা যাবে না। উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন ব্যাঙ ঝিরি জলপ্রপাত বর্ষায় পূর্ণতায় পায়। এই সময় ভরা যৌবনে ফিরে যায় জলপ্রপাতটি। বর্ষায় পাহাড় পিচ্ছিল হওয়ার কারণে সাবধানে চলাচল ও টুরিষ্ট গাইড নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
যাতায়াতঃ ঢাকা, চট্টগ্রাম কিংবা দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে আলীকদম। আলীকদম বাস স্টেশন কিংবা আলীকদম বাজার থেকে>পানবাজার>আলীকদম-থানচি সড়কের ১৭ কিলোমিটারে আদু মুরুং পাড়া বাজার>ওয়াংপা ঝর্ণা>পামিয়া মুরুং মেম্বার পাড়া>তুক অ বা ব্যাঙঝিরি জলপ্রপাত। এ জলপ্রপাত থেকে খানিক দুরত্বে রয়েছে দামতুয়া ঝর্ণা।