আলীকদম সংবাদদাতা:
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নে জমি দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাইদের হামলায় রক্তাক্ত জখম হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন খতিজা বেগম নামের এক নারী। এ ঘটনা ঘটেছে বুধবার (৩০ আগস্ট) গভীর রাত তিনটার সময়। খতিজা বেগেমের স্বামীর নাম জামাল উদ্দিন। খতিজার পিতার সাথে প্রতিপক্ষ আব্দুল হামিদ গংদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এর আগেও আলী আকবরের পরিবারটি আব্দুল হামিদ গংদের দ্বারা হামলা শিকার হন। এ ঘটনায় গত চলতি বছরের ২২ মে আহত খতিজা বেগমের পিতা বাদী হয়ে হামলাকারী আব্দুল হামিদ, শাহেদ, আব্দুর রহিম ও আব্দুল হাকিম-সহ ১০জনকে বিবাদী করে বান্দরবান জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আমলী-২)-এ সি.আর মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় দন্ডবিধি ১৮৮০ এর ১৪৩, ৪৪৭, ৪২৭, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৭, ৩৭৯, ৫০৬ (২) ধারার অভিযোগ আনা হয়।
আদালতের নির্দেশে জমি দখল সংক্রান্ত ঘটনার তদন্ত করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল কালাম।
তদন্ত প্রতিবেদন হামলাকালীদের অনুকুলে না যাওয়ার আশংকা এ হামলা করেছেন বলে দাবী করেন বাদী আলী আকবরের মেয়ে কলেজছাত্রী জমিলা আক্তার।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. কফিল উদ্দিন বলেন, “জোর করে জমি দখলের ঘটনায় প্রতিপক্ষের লোকজন আলী আকবরের মেয়েকে মেরছে”। এ ঘটনাটি আমি জেনেছি।গুরুতর আহত খতিজা বেগমকে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে যান কফিল চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আহত খতিজার মাথায়, হাতে ও গালে প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে রক্তাক্ত জখম হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। খতিজার বাম হাত ভেঙ্গে গেছে এবং মাথায় দায়ের গভীর কোপ লেগেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খতিজার ছোটবোন কক্সবাজার সিটি কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী জমিলা জানান, তার বোনের আঘাতগুলি মারাত্মক। এখনো তার হুশ ফেরেনি।
এদিকে, গত ২২ মে আদালতে দায়ের করা মামলার এজাহারে আহত খতিজার পিতা আলী আকবার দাবী করেন, তার নামে নয়াপাড়া ইউনিয়নের ২৮৭নং তৈন মৌজায় ৩১৮ নাম্বার হোল্ডিংমূলে ১ একর ২০ শতক জমি রেকর্ড আছে। এ জমিতে আলী আকবরের বসতবাড়ি ও ক্ষেতখামার আছে।
হামলাকারী আব্দুল হামিদ, শাহেদ, আব্দুর রহিম ও আব্দুল হাকিম বুধবার গভীর রাত তিনটার সময় আলী আকবরের আখ ক্ষেত থেকে আখ কেটে নেওয়াকে বাধা প্রদান করলে খতিজার ওপর হামলে পড়ে। এ সময় খতিজার মাথায়, হাতে, গালে দায়ের কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে হামলাকারীরা।
গত ১৫ মে সকালেও আসামীরা জমির মালিক আলী আকবরকে হামলা করে আহত করে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ বলেন, আলী আকবর আমার আপন জেঠা হন। তিনি আমার পিতার ৭৮ কড়া জমি দখল করে নেয়। আমাদের পিতা মারা যাওয়ার পর জমির দখল চাইলে জেঠা আলী আকবর জমি ছেড়ে দিচ্ছে না। এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় আমরা জমি দখলে নিয়েছি। আমাদের অংশের ৭৮ কড়া জমিতে যে আখ ক্ষেতের সারি পড়েছে সেগুলি আমরা কেটে ফেলেছি। এতে কোন ঘটনা হয়নি। খতিজার আঘাত পাওয়ার ঘটনায় আমরা দায়ী নই।